কাউন্টারে ট্রেনের টিকিট কাটার নিয়ম ২০২৫ [বিস্তারিত তথ্য]

বাংলাদেশে ভ্রমণের অন্যতম জনপ্রিয় মাধ্যম হলো ট্রেন। প্রযুক্তি যতই এগিয়ে যাক না কেন, অনেক যাত্রী এখনো কাউন্টারে ট্রেনের টিকিট কাটার নিয়ম অনুসরণ করে সরাসরি স্টেশন থেকেই টিকিট সংগ্রহ করতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন। বিশেষ করে প্রবীণ নাগরিক, ইন্টারনেট ব্যবহারে অনভিজ্ঞ যাত্রীরা কাউন্টারকেই নিরাপদ মনে করেন। ২০২৫ সালে রেলওয়ে কিছু নতুন নির্দেশনা ও পরিবর্তন এনেছে, যা জানা থাকলে টিকিট সংগ্রহের প্রক্রিয়া হবে আরও সহজ ও ঝামেলাহীন।

কাউন্টারে ট্রেনের টিকিট কাটার নিয়ম ২০২৫

আপনি কি কখনো হঠাৎ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ট্রেনে ভ্রমণের? হয়তো অনলাইনে টিকিট নেই, অথবা আপনি বিশ্বাস করেন পুরনো সেই কাউন্টার টিকিটের মধ্যে একটা আলাদা আত্মিক ব্যাপার আছে? যদি তাই হয়, তাহলে এই লেখাটি আপনার জন্য! আজ আমরা জানব কাউন্টারে ট্রেনের টিকিট কাটার নিয়ম, একদম A to Z— যেন আপনি সহজে, ঝামেলাহীনভাবে, কাগজের সেই টিকিট হাতে পেতে পারেন।

আপনি যদি কাউন্টারে গিয়ে ট্রেনের টিকিট কাটতে চান, তাহলে কিছু নির্দিষ্ট ধাপ অনুসরণ করতে হবে। নিচে প্রথমে সংক্ষিপ্তভাবে নিয়মগুলো উপস্থাপন করা হলো, এরপর ধাপে ধাপে বিস্তারিত ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে।

  • ভ্রমণের আগেই জেনে নিন আপনার কাঙ্ক্ষিত ট্রেনের সময় ও গন্তব্য
  • জাতীয় পরিচয়পত্র সঙ্গে রাখতে হবে
  • সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত টিকিট কাউন্টার খোলা থাকে
  • টিকিট কাটতে হবে যাত্রার আগে ১০ দিনের মধ্যে
  • ভিড়ের সময় আগেভাগে উপস্থিত হওয়াই উত্তম

চলুন দেখে নিই কাউন্টারে ট্রেনের টিকিট কাটার নিয়ম ২০২৫ ধাপে ধাপে প্রক্রিয়া।

১. রেল স্টেশন নির্বাচন করুন

প্রথমে আপনি যে স্টেশন থেকে যাত্রা করবেন সেখানে উপস্থিত হতে হবে। প্রতিটি বড় স্টেশনে আলাদা টিকিট কাউন্টার থাকে।

২. তথ্য সংগ্রহ ও লাইনে দাঁড়ানো

কাউন্টারের সামনে নির্ধারিত লাইনে দাঁড়াতে হবে। পুরুষ, মহিলা ও প্রবীণ নাগরিকদের জন্য আলাদা লাইন থাকতে পারে।

৩. জাতীয় পরিচয়পত্র দেখানো

২০২৫ সালের নতুন নিয়ম অনুযায়ী, কাউন্টারে ট্রেনের টিকিট কাটার সময় যাত্রীর জাতীয় পরিচয়পত্র (NID) বাধ্যতামূলক।

৪. গন্তব্য, তারিখ ও ট্রেনের নাম বলুন

যে তারিখে আপনি যাত্রা করতে চান, কোন ট্রেনে যাবেন এবং কোন শ্রেণির টিকিট চান তা পরিষ্কারভাবে কাউন্টারের কর্মকর্তাকে জানাতে হবে।

৫. ভাড়া প্রদান ও টিকিট সংগ্রহ

সঠিক ভাড়া প্রদান করার পর, অফিসার আপনাকে প্রিন্টেড টিকিট প্রদান করবেন। টিকিটে ট্রেন নম্বর, সিট নম্বর, যাত্রার তারিখ ও সময় স্পষ্টভাবে লেখা থাকবে।

অনলাইনে ট্রেনের টিকিট কাটার নিয়ম নতুন নিয়ম?

২০২৫ সালে অনলাইন টিকিটিং সিস্টেমে কিছু গুরুত্বপূর্ণ আপডেট এসেছে। এখন অনলাইনে টিকিট কাটতে হলে ই-টিকিট ওয়েবসাইটে রেজিস্ট্রেশন করে NID ভেরিফাই করতে হয়। টিকিট কাটা যায় যাত্রার ১০ দিন আগে থেকে, এবং প্রতিটি অ্যাকাউন্ট থেকে সর্বোচ্চ ৪টি টিকিট কেনা যায়।

অনলাইনে ট্রেনের টিকিট কাটার নিয়ম নতুন নিয়ম সমূহ।

  • রেজিস্ট্রেশনের সময় NID ও জন্ম তারিখ আবশ্যক
  • একটি অ্যাকাউন্ট থেকে সপ্তাহে ২ বার টিকিট কেনা যাবে
  • বিকাশ, রকেট, নগদ এবং ব্যাংক কার্ডে পেমেন্ট করা যায়
  • একবার টিকিট কেটে ফেললে তা রিফান্ড বা পরিবর্তন করা কঠিন

কাউন্টার বনাম অনলাইন—কোনটা ভালো?

আচ্ছা বলুন তো, আজকাল তো অনেক কিছুই মোবাইলে হয়, তাহলে কেন কেউ কাউন্টারে যাবে?

বিষয় অনলাইন টিকিট কাউন্টার টিকিট
সময় সাশ্রয়
লাইনে দাঁড়ানো
কার্ড বা বিকাশ পেমেন্ট ❌ (শুধুমাত্র নগদ)
ফিজিক্যাল টিকিট পাওয়া
ইন্টারনেটের প্রয়োজন

ব্যক্তিগতভাবে বললে, আমি কাউন্টার টিকিটেই বেশি স্বস্তি পাই—হাতে টিকিটের একটা অন্য রকম অনুভূতি আছে, আপনি বুঝতে পারবেন যদি নিজে কখনো তা হাতে পান।

কাউন্টার ট্রেনের টিকেট কাটার সময়

আপনি যদি রেলস্টেশনের কাউন্টার থেকে টিকিট কাটতে চান, তাহলে সময় জেনে যাওয়া খুব জরুরি। দেশের বিভিন্ন বড় স্টেশনগুলোতে টিকিট কাটার সময়সূচি কিছুটা ভিন্ন হলেও, সাধারণত সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত টিকিট বিক্রি হয়ে থাকে। তবে যাত্রীদের চাপ, স্টেশনের আকার, এবং বিশেষ দিবস অনুসারে এই সময় কিছুটা বাড়ানো বা কমানো হতে পারে।

বিশেষ করে ঈদের সময় ভোর থেকে লাইন ধরে থাকেন অনেকে। তাই আগে থেকে সময় জেনে পরিকল্পনা করাই ভালো। নিচের টেবিলটি দেখে আপনি আপনার কাছের স্টেশনের সময়সূচি সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা পেতে পারেন।

স্টেশন টিকিট কাটার শুরু টিকিট কাটার শেষ বিশেষ টিপস
কমলাপুর (ঢাকা) সকাল ৮:০০ রাত ৮:০০ ঈদের সময় ফজরের আগে লাইন ধরুন
চট্টগ্রাম সকাল ৮:০০ সন্ধ্যা ৬:০০ ভোরে গেলে অপেক্ষা কম হবে
খুলনা সকাল ৯:০০ বিকেল ৫:০০ দুপুরের পরে ভিড় কম থাকে
রাজশাহী সকাল ৮:০০ বিকেল ৫:০০ অফিস টাইমে বেশি ভিড়
সিলেট সকাল ৯:০০ সন্ধ্যা ৬:০০ রবিবার সকালে চাপ বেশি
ময়মনসিংহ সকাল ৮:০০ বিকেল ৫:০০ দুপুরে লাইনে দাঁড়ানো সুবিধাজনক
রংপুর সকাল ৯:০০ বিকেল ৫:০০ শুক্রবারে চাপ অনেক বেশি
যশোর সকাল ৮:৩০ বিকেল ৪:৩০ গ্রীষ্মে সকালে যাওয়া ভালো

ট্রেন যাত্রার জন্য এখনো অনেক যাত্রী সরাসরি রেলস্টেশনের কাউন্টার থেকেই টিকিট কাটতে পছন্দ করেন। তবে যাত্রার আগে সঠিক সময়জ্ঞান না থাকলে কাউন্টারে গিয়ে হয়রানির মুখে পড়তে হতে পারে। তাই কাউন্টার ট্রেনের টিকেট কাটার সময় সম্পর্কে ধারণা থাকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

সাধারণত প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত বিভিন্ন শ্রেণির যাত্রীদের জন্য আলাদা কাউন্টার খোলা থাকে। ছুটির দিনে বা ঈদের সময় এসব সময়সীমা কিছুটা পরিবর্তিত হতে পারে। নিচের টেবিলে বিভিন্ন শ্রেণি অনুযায়ী টিকিট কাটার সময়সূচি দেওয়া হলো:

যাত্রীর ধরন টিকিট কাটার সময় মন্তব্য
সাধারণ যাত্রী সকাল ৮টা – বিকেল ৪টা প্রতিদিন খোলা থাকে
মহিলা ও বয়স্ক নাগরিক সকাল ৮টা – দুপুর ১টা আলাদা লাইন থাকে
বিশেষ ট্রেনের যাত্রী সকাল ৯টা – দুপুর ২টা নির্দিষ্ট তারিখে প্রযোজ্য
ছুটির দিনের সময়সূচি সকাল ৭টা – দুপুর ১২টা সময় আগে থেকে যাচাই করুন
ঈদ/বিশেষ টিকিট সকাল ৬টা – শেষ পর্যন্ত ব্যাপক ভিড় হয়, আগে আসাই ভালো

কাউন্টারে টিকিট কাটার সময় কিছু জরুরি টিপস

  • ভোরে যান—বিশেষ করে ঈদ বা শুক্রবারের টিকিট পেতে

  • পরিচয়পত্র কপি রাখুন

  • কাউন্টারে কথা বলার সময় স্পষ্টভাবে বলুন

  • একাধিক গন্তব্যের প্ল্যান থাকলে একাধিক তারিখ বলুন

  • ভিড় দেখে বিরক্ত হবেন না—এই অভিজ্ঞতাও কিন্তু মজার!

যাত্রীদের অভিজ্ঞতা: কাউন্টার টিকিট নিয়ে কিছু মজার কাহিনি

একবার এক ভদ্রলোক লাইনে দাঁড়িয়ে ছিলেন প্রায় ৩ ঘণ্টা। তাঁর পেছনে থাকা আরেকজন বলে উঠলেন—”ভাই, অনলাইনে টিকিট কাটা যায় জানতেন না?” উত্তরে তিনি বললেন, “কিন্তু ওখানে তো কেউ ‘ভাই’ ডাকে না!

এই কথাটা শুনে সবাই হেসে উঠেছিল। দেখুন, মানুষিক সংযোগ সব সময় প্রযুক্তিকে হার মানায়।

কাউন্টারে ট্রেনের টিকিট কাটার নিয়ম: কিছু প্রশ্ন ও উত্তর (FAQ)

১. কাউন্টার থেকে কোন সময়ে টিকিট কাটা যায়?

উত্তর: সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত কাউন্টার খোলা থাকে।

২. NID ছাড়া কাউন্টারে টিকিট পাওয়া যাবে কি?

উত্তর: না, বর্তমানে জাতীয় পরিচয়পত্র বাধ্যতামূলক।

৩. টিকিট কাটার জন্য কি আগে থেকে ফর্ম পূরণ করতে হয়?

উত্তর: সাধারণত না, তবে কোনো বিশেষ ট্রেন বা ছুটির সময় ফর্ম লাগতে পারে।

৪. কত দিন আগে থেকে কাউন্টার টিকিট পাওয়া যায়?

উত্তর: যাত্রার ১০ দিন আগে থেকে টিকিট কাটা যায়।

৫. কাউন্টারে সর্বোচ্চ কতটি টিকিট কাটা যায়?

উত্তর: একজন ব্যক্তি সর্বোচ্চ ৪টি টিকিট কাটতে পারেন।

শেষকথা।

বর্তমান প্রযুক্তির যুগে অনলাইন টিকিটিং জনপ্রিয় হলেও এখনো অনেক যাত্রী কাউন্টারে ট্রেনের টিকিট কাটার নিয়ম অনুসরণ করে টিকিট সংগ্রহ করেন। ২০২৫ সালের নতুন নির্দেশনা মেনে চললে কাউন্টার থেকে টিকিট কেনা হবে আরও সহজ, নিরাপদ এবং দ্রুত। আপনি যদি নির্ভরযোগ্য ও নির্দিষ্টভাবে ভ্রমণ করতে চান, তাহলে সময়মতো কাউন্টারে পৌঁছে জাতীয় পরিচয়পত্রসহ টিকিট কাটাই সবচেয়ে নিরাপদ উপায়।

আর ও জানুনঃ

DISCLAIMER

এই ব্লগ পোস্ট আর্টিকেল এবং আমাদের স্যোসাল মিডিয়া একাউন্ট এর তথ্য সম্পূর্ন নিরাপদ, যাচাই করা, বিভিন্ন মাধ্যমে থেকে সংগ্রত করে সবার জানার জন্য শেয়ার করা হয়েছে। আমরা বন্ধ পরিকর আপনাদের কে নির্ভুল তথ্য দিতে, তারপর ও যদি আপনাদের কোন অভিযোগ এবং কোন বেপার জানার থাকে আমাদের কে মেইল করুন profactsbd@gmail.com,ধন্যবাদ।

 Facebook Group এ আমাদের কে ফলো করুন  Follow Us
 Facebook Page এ লাইক দিয়ে ‍যুক্ত হন  Follow Us
 Twitter এ আমাদের কে ফলো করুন  Follow Us
 WhatsApp চ্যানেল এ আমাদের কে ফলো করুন  Follow Us
 Telegram চ্যানেল এ আমাদের কে ফলো করুন  Follow Us
 YouTube Channel এ আমাদের কে ফলো করুন  Follow Us 
 Quora তে আমাদের কে ফলো করুন-  Follow Us
 Pinterest এ আমাদের কে ফলো করুন-  Follow Us
 Instagram এ আমাদের কে ফলো করুন  Follow Us
 Web Stories এ আমাদের কে ফলো করুন  Follow Us
 TikTok চ্যানেল ফলো করে রাখুন  Follow Us
Threads চ্যানেল এ আমাদের কে ফলো করুন
 Follow Us

 

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top
Share via
Copy link