SSC এর পর বিদেশে পড়াশোনা (বিদেশ পড়ার খরচ, সুবিধা ও অসুবিধা)

বর্তমান সময়ে অনেক শিক্ষার্থী আছেন যারা এসএসসি পাস করার পর বিদেশে উচ্চশিক্ষার জন্য আগ্রহী। যদি আপনি তাদের মধ্যে একজন হন তবে এই আর্টিকেলটি আপনার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে।

বাংলাদেশে এসএসসি সম্পন্ন করার পর বিদেশে উচ্চশিক্ষার জন্য নানা ধরনের কোর্সে ভর্তি হওয়ার সুযোগ রয়েছে। কিন্তু প্রশ্ন হলো বিদেশে গিয়ে কোন কোন কোর্সে ভর্তি হওয়া আপনার জন্য উপযুক্ত হতে পারে? আজকের এই আর্টিকেলে আমরা এসব বিষয় বিস্তারিতভাবে আলোচনা করবো এবং আপনাকে বিদেশে উচ্চশিক্ষার জন্য সঠিক কোর্স বেছে নিতে সাহায্য করবো।

study abroad after SSC

 

SSC এর পর বিদেশে পড়াশোনা করা যাবে কি?

SSC পরীক্ষার পর বিদেশে পড়াশোনা করা সম্ভব। আপনি এসএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পর বিদেশে বিভিন্ন কোর্সে ভর্তি হতে পারেন। বাংলাদেশে যেমন এসএসসি পরীক্ষার পরে বিভিন্ন ডিপ্লোমা কোর্স করা যায় ঠিক তেমনি বিদেশেও আপনি বিভিন্ন ডিপ্লোমা কোর্স করতে পারবেন। 

এছাড়া শুধু ডিপ্লোমা কোর্সই নয় বিদেশে অনেক ধরনের প্রফেশনাল কোর্স এবং স্নাতক (ব্যাচেলর) কোর্স করার সুযোগও রয়েছে। এর মাধ্যমে আপনি নতুন স্কিল অর্জন করতে পারবেন এবং আপনার ক্যারিয়ার গঠনে সাহায্য পাবেন।

তবে বিদেশে পড়াশোনার জন্য কিছু প্রস্তুতি প্রয়োজন। প্রথমত আপনাকে জানতে হবে কোন দেশের কোন কোর্সগুলোর জন্য আপনার আগ্রহ এবং যোগ্যতা রয়েছে। দ্বিতীয়ত বিদেশি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে আবেদন করার নিয়ম এবং শর্তগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত জানাটা জরুরি। এছাড়া বিদেশে পড়াশোনার জন্য প্রয়োজনীয় ভিসা, ফান্ডিং এবং অন্যান্য বিষয়ও নিশ্চিত করতে হবে।

এসএসসি পরীক্ষার পরে বিদেশে পড়াশোনার মাধ্যমে আপনি বিভিন্ন নতুন সুযোগ ও অভিজ্ঞতা অর্জন করতে পারবেন যা আপনার ভবিষ্যতের ক্যারিয়ার গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।

SSC এর পরে বিদেশে পড়াশোনা করলে কি কি সুবিধা পাবো?

এসএসসি পাস করার পর বিদেশে পড়াশোনা করলে কিছু বিশেষ সুবিধা পাওয়া যায় যা ভবিষ্যতে আপনার শিক্ষাজীবন এবং ক্যারিয়ারের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে। আপনি যদি এসএসসি পাস করার পরপরই বিদেশে পড়াশোনা করতে যান তাহলে কিছু উল্লেখযোগ্য সুবিধা পাবেন:

১. সহজে ভর্তির সুযোগ

বিদেশে পড়াশোনা করতে গেলে অনেক সময় ব্যাচেলর ডিগ্রিতে ভর্তির প্রক্রিয়া সহজ হয়। এসএসসি পাস করার পর যদি আপনি বিদেশে কোনো কলেজে ভর্তি হন তাহলে সেখানে ভালো ফলাফল করলে ভবিষ্যতে ব্যাচেলর কোর্সে ভর্তি হতে আপনার জন্য সুবিধা হবে। অনেক ক্ষেত্রেই ভর্তির জন্য আলাদা কোনো কঠিন পরীক্ষা দিতে হয় না।

২. ভিসা পাওয়ার সম্ভাবনা বৃদ্ধি

এসএসসি পাস করার পরপরই আপনি যদি বিদেশে পড়াশোনা করার সিদ্ধান্ত নেন তাহলে ভিসা পাওয়ার ক্ষেত্রে সুবিধা হতে পারে। যেহেতু আপনি অল্প বয়সে উচ্চশিক্ষার জন্য আবেদন করছেন তাই বিভিন্ন দেশের ভিসা প্রক্রিয়া সহজ হতে পারে।

৩. আইইএলটিএস পরীক্ষা ছাড়াই ভর্তি

অনেক দেশ ও প্রতিষ্ঠানে ব্যাচেলর ডিগ্রি শুরু করার আগে আইইএলটিএস (IELTS) পরীক্ষা বাধ্যতামূলক হলেও আপনি যদি এসএসসি পাস করার পর বিদেশে কলেজে ভর্তি হন তাহলে অনেক ক্ষেত্রেই এই পরীক্ষা থেকে মুক্তি পেতে পারেন। এতে আপনার পড়াশোনার চাপ কিছুটা কমে আসবে।

৪. পছন্দমতো বিষয় বাছাইয়ের সুযোগ

আপনি বিদেশে পড়াশোনা শুরু করলে নতুন শিক্ষা ব্যবস্থার সাথে মানিয়ে নেওয়ার সময় পাবেন। এটি আপনাকে উচ্চশিক্ষার জন্য নিজের পছন্দের বিষয় বেছে নেওয়ার ক্ষেত্রে সাহায্য করবে। এর ফলে আপনি ভবিষ্যতে নিজের ক্যারিয়ার পরিকল্পনা আরও সুসংহত করতে পারবেন।

৫. পার্ট টাইম কাজের সুযোগ

প্রথম কিছু মাস ক্লাস করার পর আপনি অনেক দেশে পার্ট টাইম কাজের অনুমতি পাবেন। এটি আপনার বিদেশের খরচ মেটাতে সহায়ক হবে এবং পাশাপাশি বাস্তব জীবনের অভিজ্ঞতাও অর্জন করতে পারবেন।

৬. ব্যক্তিগত ও সামাজিক দক্ষতা বৃদ্ধি

বিদেশে পড়াশোনা করার সময় আপনি বিভিন্ন দেশের মানুষের সাথে পরিচিত হতে পারবেন এবং তাদের সংস্কৃতি সম্পর্কে জানতে পারবেন। এর ফলে আপনার ব্যক্তিগত ও সামাজিক দক্ষতা বৃদ্ধি পাবে যা ভবিষ্যতে চাকরি বা ব্যবসায় সফল হতে সহায়ক হবে।

এসএসসি পাস করার পর বিদেশে পড়াশোনা শুরু করলে আপনি উল্লেখিত সুবিধাগুলোর পাশাপাশি আরো অনেক সুবিধা পেতে পারেন যা নির্ভর করে আপনি কোন দেশে এবং কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হচ্ছেন তার ওপর।

SSC এর পর বিদেশে পড়াশোনা করার প্রক্রিয়া

SSC এর পর বিদেশে পড়াশোনা করার জন্য বিভিন্ন প্রক্রিয়া ও পদক্ষেপ রয়েছে। নিচে কিছু প্রধান প্রক্রিয়া গুলো সংক্ষেপে উল্লেখ করা হলো:

১. দেশ ও বিশ্ববিদ্যালয় নির্বাচন

বিদেশে পড়াশোনা করার প্রথম পদক্ষেপ হচ্ছে সেই দেশের নির্বাচন করা যেখানে আপনি পড়াশোনা করতে চান। কিছু দেশ শিক্ষার্থীদের জন্য সহজ শর্তাবলী রাখে এবং পড়াশোনার মানও উচ্চ মানের হয়। এরপর পছন্দের বিশ্ববিদ্যালয় নির্বাচন করতে হয় যা আপনার পছন্দের কোর্স অফার করে।

২. যোগ্যতা যাচাই

SSC পাস করার পর অনেক দেশে একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণীর সমমানের প্রোগ্রামে ভর্তি হওয়া যায় যা সাধারণত ‘হাই স্কুল ডিপ্লোমা’ হিসেবে পরিচিত। এর জন্য বিভিন্ন যোগ্যতার প্রয়োজন হয় যেমন পূর্বের শিক্ষাগত যোগ্যতা, ভাষাগত দক্ষতা ইত্যাদি।

৩. ভাষাগত দক্ষতা উন্নয়ন

বিদেশে পড়াশোনা করার জন্য ভাষাগত দক্ষতা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ইংরেজি ভাষাভিত্তিক দেশগুলোতে সাধারণত IELTS বা TOEFL পরীক্ষার স্কোর জমা দিতে হয়। কিছু দেশে নির্দিষ্ট ভাষার উপর দক্ষতা প্রমাণ করার প্রয়োজন হতে পারে যেমন জার্মানিতে পড়াশোনা করতে হলে জার্মান ভাষায় দক্ষ হতে হয়।

৪. ডকুমেন্টেশন প্রস্তুতি

বিদেশে পড়াশোনার জন্য একাধিক ডকুমেন্টেশন প্রয়োজন হয়। এর মধ্যে পাসপোর্ট, পূর্বের শিক্ষাগত সনদপত্র, ভাষা পরীক্ষার স্কোর, ব্যাংক স্টেটমেন্ট ইত্যাদি অন্তর্ভুক্ত।

৫. আবেদন প্রক্রিয়া

বিশ্ববিদ্যালয়গুলো সাধারণত তাদের নিজস্ব ওয়েবসাইটে আবেদন ফর্ম প্রকাশ করে। ফর্মটি সময়মত পূরণ করে জমা দিতে হয়। আবেদন করার সময় প্রয়োজনীয় ফি প্রদান করতে হয় এবং প্রয়োজন হলে সাক্ষাৎকারের জন্য প্রস্তুত থাকতে হয়।

৬. ভিসার আবেদন

আপনার বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি নিশ্চিত হলে সংশ্লিষ্ট দেশের দূতাবাসে স্টুডেন্ট ভিসার আবেদন করতে হয়। ভিসা প্রক্রিয়ার জন্য আপনার ডকুমেন্টেশনের মূল এবং অনুলিপি দুটোই দরকার হবে। ভিসা পাওয়ার জন্য ফাইনাল ইন্টারভিউয়ের সময় প্রয়োজনীয় প্রশ্নের সঠিক উত্তর দেওয়া গুরুত্বপূর্ণ।

৭. আর্থিক পরিকল্পনা

পড়াশোনার খরচ কিভাবে মেটানো হবে সেটা অনেক গুরুত্বপূর্ণ। অনেক দেশ স্কলারশিপ বা ফিনান্সিয়াল এইড অফার করে। এছাড়া পরিবার থেকে অর্থ সাহায্য, শিক্ষাঋণ এবং পার্ট-টাইম কাজের সুযোগ নিয়েও ভাবতে হবে।

৮. প্রস্থান এবং প্রতিষ্ঠিয় হওয়া

ভিসা পেলে এবং সমস্ত প্রস্তুতি সম্পূর্ণ হলে যাত্রার পরিকল্পনা করতে হবে। বিদেশে গিয়ে নতুন পরিবেশে মানিয়ে নেওয়ার জন্য কিছুটা সময় লাগবে এবং পড়াশোনার পাশাপাশি নিজের জীবনযাপনের জন্যও পরিকল্পনা করতে হবে।

কোন দেশে স্টুডেন্ট ভিসা পাওয়া সহজ?

বিশ্ববিদ্যালয় বা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পড়াশোনার জন্য বিদেশে যাওয়ার ক্ষেত্রে বিভিন্ন দেশের ভিসা প্রাপ্তির সুবিধা ও চ্যালেঞ্জ রয়েছে। বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য কিছু দেশের স্টুডেন্ট ভিসা পাওয়া তুলনামূলকভাবে সহজ হতে পারে। এসব দেশে সাধারণত ভিসা প্রক্রিয়া কম জটিল এবং ভর্তি হতে প্রয়োজনীয় কাগজপত্রের পরিমাণও কম থাকে।

উদাহরণস্বরূপ ভারত, মালয়েশিয়া, চীন, নেদারল্যান্ড, ফ্রান্স, মাল্টা, হাঙ্গেরি, ফিনল্যান্ড এবং পর্তুগাল এই দিক থেকে সুবিধাজনক হতে পারে।

যাইহোক স্টুডেন্ট ভিসা পাওয়ার আগে আপনাকে ওই দেশের আর্থ-সামাজিক পরিস্থিতি ও শিক্ষাব্যবস্থার সম্পর্কে ভালভাবে জানতে হবে। প্রতিটি দেশের ভিসা প্রক্রিয়া এবং শিক্ষার পরিবেশের মধ্যে পার্থক্য থাকতে পারে তাই আপনাকে সেই অনুযায়ী প্রস্তুতি নিতে হবে। যে দেশে আপনি পড়াশোনা করতে যাচ্ছেন সেই দেশের সংস্কৃতি, জীবনযাত্রা এবং শিক্ষার মান সম্পর্কে ভাল ধারণা থাকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

ভিসা প্রাপ্তির জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র, অর্থনৈতিক শর্তাবলি এবং ভাষাগত দক্ষতা সবকিছুই আপনাকে খেয়াল রাখতে হবে। এছাড়া বিদেশের পরিবেশের সাথে মানিয়ে চলার সক্ষমতাও গুরুত্বপূর্ণ। আপনার প্রয়োজনে স্থানীয় শিক্ষা পরামর্শক বা ভিসা বিশেষজ্ঞের সাহায্য নেওয়া উপকারী হতে পারে।

শেষকথা

বিদেশে পড়াশোনা করার সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে এর সুবিধা ও অসুবিধা সম্পর্কে ভালোভাবে জানা জরুরি। বিদেশে পড়াশোনা অবশ্যই একজন শিক্ষার্থীর জীবনে একটি বড় পরিবর্তন আনতে পারে তবে সঠিকভাবে প্রস্তুতি না নিলে এর অসুবিধাগুলো চ্যালেঞ্জিং হতে পারে।

সুতরাং পরিবারের সাথে আলোচনা, ভালোভাবে গবেষণা এবং উপযুক্ত পরিকল্পনা করে তবেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত।

আমাদের আজকের আলোচনা এই পর্যন্তই। এছাড়া বিদেশে পড়াশোনার বিষয়ে আপনার আর কোন প্রশ্ন থাকলে কমেন্ট করুন।

ধন্যবাদ সবাইকে।

আরও জানুন:

DISCLAIMER

এই ব্লগ পোস্ট আর্টিকেল এবং আমাদের স্যোসাল মিডিয়া একাউন্ট এর তথ্য সম্পূর্ন নিরাপদ, যাচাই করা, বিভিন্ন মাধ্যমে থেকে সংগ্রত করে সবার জানার জন্য শেয়ার করা হয়েছে। আমরা বন্ধ পরিকর আপনাদের কে নির্ভুল তথ্য দিতে, তারপর ও যদি আপনাদের কোন অভিযোগ এবং কোন বেপার জানার থাকে আমাদের কে মেইল করুন profactsbd@gmail.com,ধন্যবাদ।

 Facebook Group এ আমাদের কে ফলো করুন Follow Us
 Facebook Page এ লাইক দিয়ে ‍যুক্ত হন Follow Us
 Twitter এ আমাদের কে ফলো করুন Follow Us
 WhatsApp চ্যানেল এ আমাদের কে ফলো করুন Follow Us
 Telegram চ্যানেল এ আমাদের কে ফলো করুন Follow Us
 YouTube Channel এ আমাদের কে ফলো করুন Follow Us 
 Quora তে আমাদের কে ফলো করুন- Follow Us
 Pinterest এ আমাদের কে ফলো করুন- Follow Us
 Instagram এ আমাদের কে ফলো করুন Follow Us
 Web Stories এ আমাদের কে ফলো করুন Follow Us
 TikTok চ্যানেল ফলো করে রাখুন Follow Us
Threads চ্যানেল এ আমাদের কে ফলো করুন
 Follow Us

 

Leave a Comment