চকবাজার পাইকারি মার্কেট সাপ্তাহিক বন্ধের দিন | কসমেটিক পাইকারি মার্কেট, ইত্যাদি ।

আপনি কি জানেন বাংলাদেশের সবচাইতে বড় পাইকারি মার্কেট কোনটি? আমাদের প্রতিদিনের ব্যবহারের বিভিন্ন কসমেটিক্স ও বিউটি প্রোডাক্ট এগুলোর পাইকারি বাজার কোথায়। এ সকল কিছুর সবচাইতে বড় পাইকারি মার্কেট হচ্ছে চকবাজার। 

বলতে গেলে চকবাজার থেকেই সারা বাংলাদেশে সকল ধরনের কসমেটিক্স ও বিউটি প্রোডাক্ট পাইকারি মূল্যে বিক্রয় করা হয়।ঢাকার চকবাজার পাইকারি মার্কেট মনিহারী পণ্যের হোলসেল মার্কেট হিসাবে পরিচিত।

এখানে ৭ টাকায় মাঝনি, ১টাকায় কটন বাড, ২২ টাকায় পার্টি স্প্রে সহ নানান ধরনের পণ্য অতি স্বল্প মূল্যে পাওয়া যায়।

বাংলাদেশের সকল খুচরা ব্যবসায়ীকে প্রতিমাসে একবার হলেও  চকবাজারে যেতে হয়।ব্যবসাহীরা ছাড়াও সাধারণ মানুষজনও সেখানে কেনাকাটা করতে যায়।  তাই চকবাজার কোন কোন দিন বন্ধ থাকে সে সম্পর্কে জ্ঞান ধারণা থাকা অত্যন্ত জরুরী।

তা না হলে শুধু শুধু আপনার সময় ও শ্রম উভয় নষ্ট হবে। তাই আজকের আর্টিকেলে আমরা আপনাদেরকে জানাবো চকবাজারের সাপ্তাহিক বন্ধের দিনগুলো সম্পর্কে। তাই চলুন দেরি না করে এখনই আর্টিকেলটি শুরু করা যাক:

chawkbazar paikari bazar market off day Image

চকবাজার মার্কেট বন্ধের দিন

চকবাজার পাইকারি মার্কেট প্রতি সপ্তাহে সাধারণত দুই দিন বন্ধ থাকে। শুক্রবার সারাদিন ও শনিবার অর্ধ দিন। তাছাড়া সাপ্তাহের অন্যান্য দিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত এটি জাকজমকের সাথে খোলা থাকে। দেশি ও বিদেশি পণের বিশাল মেলা নিয়ে বিক্রেতাগন পাইকারি রেটে পণ্য ক্রয় বিক্রয় করে থাকে।

দিনবাজারের অবস্থা
শুক্রবারপুরো দিন বন্ধ
শনিবারঅর্ধদিন বন্ধ (বেশিরভাগ দোকান সকাল থেকে খোলা থাকে)

বিশেষ দ্রষ্টব্য:

  • সরকারি ছুটির দিনে চকবাজার বন্ধ থাকতে পারে।
  • কোনো নির্দিষ্ট দোকানের খোলার-বন্ধের সময় সম্পর্কে জানতে সেই দোকানের সাথে যোগাযোগ করাই ভালো।

চকবাজার মার্কেট কবে বন্ধ থাকে

গনপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার এর মার্কেটিং নিয়ম অনুসারে যানজট নিরশন ও বিদ্যুৎ সাশ্রয়  এর লক্ষে চকবাজার মার্কেট শুক্রবার ও শনিবার (অর্ধেক বেলা) বন্ধ থাকে। এছাড়া সপ্তাহের বাকি ৫ দিন সকাল ৮টা  থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত খোলা থাকে।

চকবাজারের সাপ্তাহিক ছুটির তালিকা (সরকারি নিয়ম অনুযায়ী):

সপ্তাহের দিনবন্ধ থাকার তারিখবন্ধ রয়েছে (হ্যাঁ/না)
রবিবার  খোলা থাকেনা
সোমবার  খোলা থাকেনা
মঙ্গলবার  খোলা থাকেনা
বুধবার  খোলা থাকেনা
বৃহস্পতিবার  খোলা থাকেনা
শুক্রবারপুরো দিন বন্ধ থাকেহ্যাঁ
শনিবারঅর্ধদিন বন্ধ থাকেহ্যাঁ

মনে রাখবেন

  • সপ্তাহের অন্য দিনগুলো ভোর থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত চকবাজার খোলা থাকে।
  • পাইকারি বাজারগুলো আরও দেরী, গভীর রাত পর্যন্তও খোলা থাকতে পারে।

চকবাজার পাইকারি মার্কেট কোথায়

আমাদের অনেকেই জানি না যে চকবাজার পাইকারি মার্কেট কোথায়? উত্তরঃ চকবাজার পাইকারি মার্কেট রাজধানী ঢাকার লালবাগ এ অবস্থিত একটি গুরুত্বপূর্ণ ও অনেক দরকারি পণ্যের একটি সমাহার কেন্দ্র।

রাজধানী ঢাকা শহরের পুরান ঢাকায় এলাকায় অবস্থিত এই মার্কেট টি সেই মোগল আমল থেকে চলে আসছে। এই মার্কেটে কাপড়, অন্তবাস, মনিহারী পণ্য, গয়না এবং ইলেকট্রনিক্সের মতো পণ্যের একটি বিস্তৃত বিন্যাস রয়েছে।

ঢাকার লালবাগে চকবাজার পাইকারি মার্কেট  অবস্থিত। এর আশেপাশে বেগম বাজার,ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার এবং বড় কাঠারা অবস্থিত। ইসলামপুর মার্কেট থেকে এখানে জেতে পায়ে হেটে প্রায় ২০ মিনিট লাগে। এছাড়া দেশের যেকোনো প্রান্ত থেকে খুব সহজেই এখানে আসা যায়।

ঢাকার চকবাজার মার্কেট একটি প্রাণবন্ত জায়গা যা অবশ্যই যে কোনো দর্শনার্থীর নজর কাড়বে। এই বাজার টি বিভিন্ন ধরনের উজ্জ্বল স্টল এবং প্রাণবন্ত লোকারণ্যে ভরা। সমস্ত ধরণের পণ্য বিক্রি এবং কেনাকাটা হয়।

বহিরাগত খাবারের গন্ধ বাতাস ও তাজা মশলার গ্রান মন ভরিয়ে দেয় আর মনে করিয়ে দেয় এখানকার হাজার বছরের খাবারের ঐতিহ্যকে। চকবাজার মার্কেটে সর্বস্তরের মানুষের দেখা মেলে, যা ঢাকার বিশেষ করে পুরান ঢাকার বৈচিত্র্যের এক অনন্য উদাহরণ।

চকবাজার কসমেটিক পাইকারি মার্কেট

চকবাজার ঢাকা, বাংলাদেশের বৃহত্তম পাইকারি বাজারগুলোর মধ্যে একটি। এটি বিভিন্ন ধরণের পণ্যের জন্য পরিচিত, যার মধ্যে রয়েছে কসমেটিকস।

চকবাজারে অনেক কসমেটিক পাইকারি দোকান রয়েছে, যেখানে আপনি বিভিন্ন ব্র্যান্ড এবং ধরণের মেকআপ, স্কিন কেয়ার, হেয়ার কেয়ার এবং অন্যান্য কসমেটিক পণ্য খুঁজে পেতে পারেন।

চকবাজারে কসমেটিক পাইকারি দোকানগুলো সাধারণত ভোর থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত খোলা থাকে। তবে, কিছু দোকান আরও দেরী পর্যন্ত খোলা থাকতে পারে।

চকবাজারে কিছু জনপ্রিয় কসমেটিক পাইকারি দোকানের নাম :

  • আল্লাহর দান আকবর ষ্টোর: এই দোকানটি বিভিন্ন ব্র্যান্ডের মেকআপ, স্কিন কেয়ার, হেয়ার কেয়ার এবং অন্যান্য কসমেটিক পণ্য বিক্রি করে।

  • আশরাফ ট্রেডার্স: এই দোকানটি ইমিটেশন জুয়েলারি এবং কসমেটিক পণ্য বিক্রি করে।

  • বি.এম.জে. ট্রেডার্স: এই দোকানটি বিভিন্ন ব্র্যান্ডের পারফিউম এবং কসমেটিক পণ্য বিক্রি করে।
  • হাজী এম.এ. গফুর এন্ড সন্স: এই দোকানটি বিভিন্ন ব্র্যান্ডের মেকআপ, স্কিন কেয়ার, হেয়ার কেয়ার এবং অন্যান্য কসমেটিক পণ্য বিক্রি করে। এটি চকবাজারের মসজিদের কাছে অবস্থিত।

  • আল-আমিন ট্রেডার্স: এই দোকানটি বিভিন্ন ব্র্যান্ডের মেকআপ, স্কিন কেয়ার, হেয়ার কেয়ার এবং অন্যান্য কসমেটিক পণ্য বিক্রি করে। এটি চকবাজারের রেলওয়ে স্টেশনের কাছে অবস্থিত।

এই দোকানগুলি সবই ভোর থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত খোলা থাকে। তবে, কিছু দোকান আরও দেরী পর্যন্ত খোলা থাকতে পারে।

চকবাজারে কসমেটিক পাইকারি দোকানে কেনাকাটা করার সময়, দর কষাকষি করতে ভুলবেন না। বেশিরভাগ দোকানেই দর কষাকষি করা হয়, তাই আপনি ভালো ডিল পেতে পারেন। পণ্য কেনার আগে গুণমানও পরীক্ষা করুন। এবং, কিছু পণ্যের ওয়ারেন্টি থাকে, তাই কেনার আগে অবশ্যই ওয়ারেন্টি সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করুন।

চকবাজার যাওয়ার উপায়

ঢাকার চকবাজার বাজারে পৌঁছানো তুলনামূলকভাবে সহজ, বেশ কিছু গণপরিবহন রয়েছে যেগুলোর মাধ্যমে সরাসরি এখানে যেতে পারবেন। ঢাকা মেট্রো পরিবহন, যা একটি আধুনিক ও দ্রুত ট্রানজিট সিস্টেম, চকবাজার বাজারে সরাসরি প্রবেশাধিকার প্রদান করে।

অন্যান্য পরিবহন গুলির মধ্যে রয়েছে বাস, রিকশা এবং ট্যাক্সি বা প্রাইবেট কার। যার মাধ্যমে ক্রেতা বিক্রেতা কিংবা দর্শকগন তাদের পছন্দসই গন্তব্যে যেতে পারেন সহজ উপায় এ। ভাড়া সাধারণত খুব সাশ্রয়ী হয় এবং ভ্রমণে সাধারণত ৩০-৪০ মিনিটের বেশি সময় লাগে না।

চকবাজার বাজারের দর্শনার্থীরা ঢাকার যেকোনো স্থান থেকে সহজেই সেখানে যেতে পারেন। ঢাকার পাবলিক ট্রান্সপোর্ট বাস, এবং মোটর সাইকেল, সিএনজি করে। বিকল্পভাবে, চকবাজারে যাওয়ার জন্য পাঠাও বা উবারের মতো অনলাইন পরিষেবা ব্যবহার করতে পারেন।

মিরপুর হতে: মিরপুর থেকে বেশ কয়েকটি বাস চকবাজারের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। তাদের মধ্যে মিরপুর মেট্রো লিংক, মিরপুর মেট্রো, আরও বেশ কয়েকটি বাস।

গাবতলি/সাভার হতে: ওয়েল কাম ,সাভার পরিবহন, ঠিকানা ইত্যাদি বাসে করে প্রথমে নিউমার্কেট নামতে হবে।এরপর সেখান থেকে বিকাশ বাসে যাওয়া যাবে।

রামপুরা/বাড্ডা/মালিবাগ হতে: প্রথমে তরঙ্গ প্লাস কিংবা রমজান পরিবহন বাস এ করে সরাসরি সাইন্স ল্যাব আসতে হবে। সেখান থেকে রিক্সা, বাস, মোটর সাইকেল পাবেন।

নারায়ণগঞ্জ হতে: সরাসরি নারায়ণগঞ্জ হতে আসতে হলে মেঘলা পরিবহন বাস এ করে সিটি কলেজ গেট এর সামনে নামতে হবে যেটি ধানমন্ডি তে। এখান থেকে মিরপুর থেকে নিউমার্কেট অভিমুখি সকল বাসে করে আসতে পারবেন।

উত্তরা/এয়ারপোর্ট হতে: বিকাশ, প্রজাপতি ইত্যাদি বাসে সরাসরি এখানে আসতে পারবেন।

ফার্মগেট/খামারবাড়ি হতে: আড়ং হয়ে সংসদ ভবনের সামনে দিয়ে   ভেঙ্গে ভেঙে যেতে পারবেন । তবে সরাসরি যেতে চাইলে খামার বারি মোর থেকে মেট্রো লিংক কিংবা বিকাশ  পরিবহনে উঠতে হবে।

চকবাজার কোথায় কি পাওয়া যায়

চকবাজারে বিভিন্ন ধরণের জিনিসপত্র পাওয়া যায়, যার মধ্যে রয়েছে:
  • খাবার: চকবাজারে তাজা ফল, শাকসবজি, মাংস, মাছ, মুরগি, ডিম, দুগ্ধজাত দ্রব্য এবং অন্যান্য খাবার সামগ্রী পাওয়া যায়।
  • পোশাক: চকবাজারে পোশাকের জন্য বিভিন্ন ধরণের দোকান রয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে শাড়ি, থ্রি-পিস, শার্ট, প্যান্ট, জুতা এবং অন্যান্য পোশাক।
  • ইলেকট্রনিক্স: চকবাজারে মোবাইল ফোন, ল্যাপটপ, টেলিভিশন, রেফ্রিজারেটর এবং অন্যান্য ইলেকট্রনিক জিনিসপত্র পাওয়া যায়।
  • সৌন্দর্যবর্ধক: চকবাজারে মেকআপ, স্কিন কেয়ার, পারফিউম এবং অন্যান্য সৌন্দর্যবর্ধক জিনিসপত্র পাওয়া যায়।
  • ঘরের সাজসজ্জা: চকবাজারে ফার্নিচার, কার্পেট, বালিশ, চাদর এবং অন্যান্য ঘরের সাজসজ্জার জিনিসপত্র পাওয়া যায়।

চকবাজার নিয়ে প্রশ্ন ও উত্তর

১। প্রশ্নঃ চকবাজার কোথায় কি পাওয়া যায়?

উত্তরঃ চকবাজার মার্কেট এ অতি স্বল্প মূল্যে হোলসেল পণ্য পাওয়া যায়। এসবের মধ্যে শার্ট, প্যান্ট, টি শার্ট, থ্রি পিস, পাঞ্জাবি, পাজামা, দোকানের যাবতীয় মনিহারি পণ্য (এটির জন্যই চকবাজার পরিচিত)। এছাড়াও জুতা, বই থেকে শুরু করে সকল ধরনের পণ্য পাওয়া যায়।

২। প্রশ্নঃ চকবাজার কসমেটিক্স পাইকারি মার্কেট?

উত্তরঃ   সারা বাংলাদেশের কসমেটিক্স পণ্যের জন্য বিখ্যাত চকবাজার পাইকারি মার্কেট। আপনি এখানে সকল ধরনের কসমেটিক পণ্য সামগ্রী পেয়ে যাবেন। এছাড়াও মেয়েদের প্রয়োজনীয় খুঁটিনাটি সকল আইটেম পাইকারি মূল্যে পেয়ে যাবেন।

সবশেষে 

আপনি যদি পাইকারি ও খরচা মূল্যে সকল প্রকার পণ্য কিনতে চান তাহলে আপনার অবশ্যই চকবাজার যাওয়া উচিত। এটি বাংলাদেশের সবচাইতে বড় পাইকারি মার্কেট।

এখানে আপনি নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস সাবান থেকে শুরু করে সবকিছু সুলভ মূল্যে পেয়ে যাবেন। আর চকবাজার যাওয়ার আগে অবশ্যই সাপ্তাহিক বন্ধের দিনগুলো ভালোভাবে দেখে যাবেন তা না হলে শুধু শুধুই সময় নষ্ট হবে।

আজকের আর্টিকেলে আমরা আপনাদেরকে চকবাজারে সাপ্তাহিক বন্ধের দিনগুলো সম্পর্কে ধারণা দিয়েছি। আশা করি আর্টিকেলটি  থেকে আপনি কিছুটা হলে উপকৃত হয়েছেন। আমাদের সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ

আরও জানুনঃ

Author

  • Nur E Jannat

    আমি শারমিন আক্তার,  লিখা লিখির মাধ্যমে মানুষ কে সঠিক তথ্য দেওয়া আমার এক ধরনের শখ বলতে পারেন, তাই আমি নিয়মিত ব্লগ আর্টিকেল শেয়ার করতে পছন্দ করি। আশা করি আমার শেয়ার করা আর্টিকেল আপনাদের কাজে আসবে, এটাই আমার স্বার্থকতা। সবাই কে ধন্যবাদ।

    View all posts

Leave a Comment